শেয়ার মার্কেট শেখা শুরু করুন

শেয়ার মার্কেট শেখা শুরু করতে চান? এই বাংলা গাইডে আপনি পাবেন IPO, ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট, ব্রোকার নির্বাচন, বিনিয়োগের ধাপ এবং ঝুঁকি সম্পর্কে বিস্তারিত সহ

শেয়ার মার্কেট কী? 

শেয়ার মার্কেট কী এবং কীভাবে কাজ করে তার পরিচিতি

শেয়ার বাজারও এক ধরনের বাজার, যেমন সাধারণ বাজার।
যেমন সাধারণ বাজারে নানান জিনিসপত্র কেনাবেচা হয়, ঠিক তেমনি শেয়ার বাজারেও কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়। এখানে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম ওঠানামা করে। সাধারণ মানুষ কম দামে শেয়ার কিনে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ করে। আবার অনেক সময় শেয়ারের দাম কমে গেলে তারা ক্ষতির সম্মুখীনও হয়। তাই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের আগে সচেতনতা ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব জরুরি।

শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ শুরুর আগে এর ইতিহাস জানুন

নেদারল্যান্ডসের শেয়ার বাজার – ঐতিহাসিক ছবি ও পুরনো দোকানের চিত্র

প্রথম শেয়ার মার্কেটের সূচনা হয়েছিল ১৬০২ সালে, নেদারল্যান্ডসে। আজকের আধুনিক শেয়ার মার্কেটের ভিত্তি স্থাপিত হয় ১৭৯২ সালে, যখন নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ গঠিত হয়। ১৯৯২ সালে ভারতের প্রথম ডিম্যাটেরিয়ালাইজড ইলেকট্রনিক স্টক এক্সচেঞ্জ হিসেবে এনএসই (NSE) প্রতিষ্ঠিত হয়।

শেয়ার মার্কেটের প্রধান উপাদান

ভারতের প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ BSE এবং NSE

  • স্টক এক্সচেঞ্জ
  • : BSE, NSE
  • ব্রোকার
  • : বিনিয়োগকারীর এবং এক্সচেঞ্জের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী।
  • ইন্ডেক্স
  • : Nifty 50, Sensex, Bank Nifty

শেয়ার মার্কেটের কাজের ধাপ

 ব্রোকার, ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট, ও খরচের বিস্তারিত

Zerodha, Angel One, 5Paisa, Groww ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে শেয়ার বাজারের যাবতীয় ব্রোকার চার্জ ও মূল্যের তুলনা করা হয়েছে এই ছবিতে।

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরু করতে হলে প্রথমেই ব্রোকারের মাধ্যমে একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। ব্রোকার হলো সেই মধ্যস্থতাকারী যারা আপনাকে শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ করে দেয়। চলুন, সহজ ভাষায় পুরো প্রক্রিয়াটা জেনে নিই!


আইপিও (Initial Public Offering): নতুন শেয়ার ইস্যু

একটি কোম্পানি নতুন শেয়ার ইস্যু করছে – কোম্পানির একজন প্রতিনিধি শেয়ার বাজারে দাঁড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের জানাচ্ছেন এই তথ্য।

যখন কোনো কোম্পানি প্রথমবার শেয়ার বাজারে আসে, তখন তারা IPO ইস্যু করে। এর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সেই কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারেন।

সেকেন্ডারি মার্কেট: যেখানে শেয়ার কেনাবেচা হয়


আইপিওর পর, শেয়ারগুলো সেকেন্ডারি মার্কেট-এ কেনাবেচা হয়। এখানে বিনিয়োগকারীরা একে অপরের কাছ থেকে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন।

  • লেনদেনের জন্য ব্রোকারের ভূমিকা

    ব্রোকার নির্বাচন, ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা এবং শেয়ার কেনাবেচার প্রক্রিয়া বোঝানো হয়েছে এই ছবিতে।

    শেয়ার কেনাবেচার জন্য একটি ব্রোকারের সাহায্য নিতে হয়। কিছু জনপ্রিয় ব্রোকার হলো:

    ব্রোকাররা স্টক এক্সচেঞ্জের সাথে আপনার সংযোগ স্থাপন করে, যাতে আপনি সহজেই অনলাইনে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন।


    ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা

    অনলাইনে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলার সহজ উপায় – মোবাইল ও ল্যাপটপে

    ব্রোকারের মাধ্যমে আপনাকে একটি ডিম্যাট (Demat) অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। এটি হলো ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট, যেখানে আপনার কেনা শেয়ারগুলি সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষণ করা হয়।


    লেনদেনের খরচ (Brokerage Charges)

    একজন ব্যক্তি বোঝাচ্ছেন শেয়ার বাজারে লেনদেনের মোট খরচ, যেখানে ব্রোকারেজ চার্জ, GST, STT ও SEBI চার্জ সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে।

    শেয়ার কেনাবেচায় ব্রোকাররা নির্দিষ্ট পরিমাণ চার্জ নেয়। উদাহরণস্বরূপ:

    • Buy/Sell চার্জ: সাধারণত প্রতি লেনদেনে ₹20 ফি লাগে।
    • সর্বমোট খরচ: যদি আপনি একবার শেয়ার কিনে ও বিক্রি করেন, তবে মোট চার্জ হবে ₹40 (₹20 buy + ₹20 sell)।
    • বার্ষিক মেইন্টেন্যান্স চার্জ (AMC): কিছু ব্রোকার বছরে ₹300-₹500 এর মতো ফি নেয় ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট মেইন্টেন করার জন্য।

    উদাহরণ:

    ধরুন, আপনি Zerodha-তে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। যদি আপনি ₹10,000 মূল্যের শেয়ার কেনেন, তাহলে:

    • Buy চার্জ: ₹20
    • Sell চার্জ: ₹20
    • সর্বমোট লেনদেন চার্জ: ₹40

    এর বাইরে, বছরে একবার মেইন্টেন্যান্স চার্জ দিতে হতে পারে। তবে অনেক ব্রোকার নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রথম বছর ফ্রি অফারও দেয়।

বিনিয়োগের সুবিধা

  • দীর্ঘমেয়াদি লাভ: শেয়ার মার্কেটে সময়ে সময়ে ভালো লাভ হতে পারে।
  • লভ্যাংশ: প্রতিদিন কেনাবেচা করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
  • মালিকানা: শেয়ার কিনলে আপনি কোম্পানির ছোট অংশের মালিক হয়ে যান।

ঝুঁকি এবং সতর্কতা

  • বাজার ওঠানামা করে।
  • অর্থনৈতিক পরিবর্তন হতে পারে।
  • সঠিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা উচিত।

শেয়ার মার্কেট শেখা ও বিশ্লেষণের ধরণসমূহ

একজন ব্যক্তি টেবিলে ল্যাপটপ ও মোবাইলের পাশে বসে বিজনেস পত্রিকা পড়ছেন, ছবির উপরে লেখা: 'শেয়ার মার্কেট বিশ্লেষণের ধরণ'।

  1. টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস শেখা শুরু করুন।
  2. ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস শেখা শুরু করুন।

শেয়ার মার্কেট শুরু করার জন্য টিপস

  • সঠিক ব্রোকার নির্বাচন করুন।
  • বাজার বিশ্লেষণ শেখা শুরু করুন।
  • ছোট বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করুন।

উপসংহার

একজন পেশাদার ব্যক্তি কম্পিউটারের স্ক্রিনে শেয়ার বাজারের ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট বিশ্লেষণ করছেন

আপনি যদি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার কথা ভাবেন, তবে এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে এই বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে আগে ভালোভাবে শেখা জরুরি। তারপর ধাপে ধাপে কাজ শুরু করে বিনিয়োগের পথে এগিয়ে চলুন। জ্ঞান ও সচেতনতার মাধ্যমে এই পথ আপনাকে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।


দাবিত্যাগ (Disclaimer): 

শেয়ার মার্কেট ব্লগের জন্য সাধারণ তথ্য ভিত্তিক দাবিত্যাগ

এই ব্লগে প্রকাশিত সকল তথ্য শুধুমাত্র শিক্ষামূলক ও সাধারণ তথ্যের জন্য প্রদান করা হয়েছে। আমরা তথ্যের যথাসম্ভব নির্ভুলতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি, তবে এটি বিনিয়োগ পরামর্শ নয়। বিনিয়োগের আগে একজন পেশাদার পরামর্শকের সঙ্গে কথা বলুন।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন