পোস্টগুলি

How Share Price is Determined? | শেয়ারের দাম কিভাবে নির্ধারণ হয়?

শেয়ারের দাম কীভাবে ঠিক হয়? আজই শিখুন StockMarketWealth-এ।

শেয়ারের দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়া:

ভূমিকা 

শেয়ারবাজারের প্রতিদিনের ওঠানামা বিনিয়োগকারীদের জন্য যেমন উত্তেজনাপূর্ণ, তেমনি জটিল। অনেকেই জানেন না কিভাবে শেয়ারের দাম নির্ধারিত হয়। এবার আমরা সহজ ভাষায় এবং বিশদভাবে শেয়ারের দাম নির্ধারণের প্রতিটি ধাপ বিশ্লেষণ করবো।


চাহিদা ও যোগান

শেয়ারের দামের সবচেয়ে বড় চালিকা শক্তি হলো চাহিদা এবং যোগান। কোনো শেয়ারের প্রতি আগ্রহ বাড়লে তার দাম বেড়ে যায়, আবার আগ্রহ কমলে দামও কমে। যেমন, যদি কোনো কোম্পানি (যেমন Reliance Jio) নতুন সেবা চালু করে, তাহলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়তে পারে এবং সেই শেয়ারের দামও বেড়ে যায়। আরও পড়ুন: ভারতের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের গাইডলাইন

এই চিত্রে শেয়ার বাজারে মূল্যের ওঠানামায় চাহিদা ও সরবরাহের প্রভাব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনটি ভাগে বিভক্ত: উচ্চ চাহিদা (High Demand), সুষম বাজার (Balanced), ও অতিরিক্ত সরবরাহ (Excess)। প্রতিটি বিভাগে বিনিয়োগকারীদের জন্য ধারণা দেওয়া হয়েছে কিভাবে চাহিদা এবং সরবরাহের ভারসাম্য মূল্যে প্রভাব ফেলে।


কোম্পানির পারফরম্যান্স

একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা যেমন লাভ, আয় এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শেয়ারের দামে প্রভাব ফেলে। তাই কোম্পানির প্রতি বছর কীভাবে আর্থিকভাবে উন্নতি করছে, সেদিকে নজর রাখা উচিত। আরও জানুন: ভারতের শেয়ারবাজারে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর পারফরম্যান্স

শেয়ার বাজার: একটি চিত্র যেখানে কোম্পানির আর্থিক পারফরম্যান্স ও শেয়ার মূল্যের প্রভাব দেখানো হয়েছে। ভালো পারফরম্যান্স শেয়ার মূল্যে ২০% পর্যন্ত ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, যেখানে অনিশ্চয়তা, প্রবৃদ্ধির সমস্যা ও বাজারের উদ্বেগ ধীরে ধীরে মূল্য হ্রাসের কারণ হতে পারে। এই তথ্যগুলি বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।

অর্থনৈতিক অবস্থা

মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার হার এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই দেশের মুদ্রাস্ফীতি বা ইনফ্লেশন (inflation) কত হয়েছে সময়ের পরিবর্তনে, সেদিকে খেয়াল রাখা খুবই প্রয়োজন। বিস্তারিত দেখুন: ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা

আর্থিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ: মুদ্রাস্ফীতি হার, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবস্থা—এই তিনটি বিষয় বিনিয়োগকারীর সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের মুদ্রাস্ফীতি হার কীভাবে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।


সুদের হার

যখন ব্যাংকের সুদের হার কম থাকে, বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বেশি আগ্রহী হয়, ফলে শেয়ারের দাম বাড়ে। পড়ুন: ভারতে সুদের হারের বর্তমান অবস্থা

সুদের হার ও শেয়ার বাজারের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই চিত্রে। উচ্চ সুদের হার কোম্পানির ঋণ গ্রহণ ব্যয় বাড়ায়, ফলে লাভ কমে ও শেয়ার দাম কমে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার নির্ধারণ করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখে। অপরদিকে, নিম্ন সুদের হার বিনিয়োগকারীদের বন্ড থেকে শেয়ারে অর্থ স্থানান্তরে উৎসাহিত করে, যা শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করে।


বাজার মনোভাব

গুজব, খবর এবং বিনিয়োগকারীদের অনুভূতি শেয়ারের দামে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলে। বাজারে গুজব খবরে কান না দিয়ে নিজের অ্যানালিসিস এর উপরে কাজ করা উচিত। আরও পড়ুন: ভারতের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব

এই পাই চার্টে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের মানসিকতার উপর প্রভাব ফেলে এমন ৪টি প্রধান উপাদানের হার দেখানো হয়েছে: রিউমার বা গুজব (২৫%), খবর বা নিউজ (২৫%), ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ (২০%) এবং বিনিয়োগকারীর মনোভাব বা সেন্টিমেন্ট (৩০%)। এটি শেয়ার বাজার বিশ্লেষণে আবেগ ও তথ্যের ভূমিকা তুলে ধরে।


প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ

চার্ট এবং প্যাটার্ন বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভবিষ্যতের দামের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। তাই ক্যান্ডেলস্টিক প্রতি বছর কীভাবে তৈরি হয়েছে, সেদিকে নজর রাখা উচিত। শিখুন: ভারতের শেয়ারবাজারে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের গাইড

এই চিত্রে টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ শেয়ার মূল্যের পূর্বাভাস দেওয়ার পদ্ধতি দেখানো হয়েছে। চার্ট ও প্যাটার্ন বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিটি ক্যান্ডেলস্টিক গঠনের ওপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


সরকারের নীতিমালা

নতুন নিয়ম, করের হার পরিবর্তন বা প্রণোদনা শেয়ারবাজারে ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই সরকারের সমস্ত নীতি, যেগুলো সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়, সেগুলোর উপর সব সময় খেয়াল রাখা উচিত যাতে আমরা আপডেট থাকতে পারি। আরও জানুন: ভারতের শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক নীতিমালা পরিবর্তন

এই চিত্রে সরকারি নীতিমালার পরিবর্তন, করহার এবং প্রণোদনার মাধ্যমে শেয়ার বাজারে ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে—এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের নিয়মিতভাবে সরকারের নতুন আইন ও নীতিমালা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি যাতে তারা সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।


নির্ধারণের মডেল

DDM মডেল: ভবিষ্যৎ ডিভিডেন্ডের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ। 

P/E মডেল: কোম্পানির আয়ের ভিত্তিতে শেয়ারের দাম নির্ধারণ হয়।

উপসংহার

শেয়ারের দাম নির্ধারণ একটি জটিল এবং বহুস্তরীয় প্রক্রিয়া। বিনিয়োগের আগে সঠিক বিশ্লেষণ প্রয়োজন। 

দাবিত্যাগ (Disclaimer): এই ব্লগে প্রকাশিত সকল তথ্য শুধুমাত্র শিক্ষামূলক ও সাধারণ তথ্যের জন্য প্রদান করা হয়েছে। আমরা তথ্যের যথাসম্ভব নির্ভুলতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি, তবে এটি বিনিয়োগ পরামর্শ নয়। বিনিয়োগের আগে একজন পেশাদার পরামর্শকের সঙ্গে কথা বলুন।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন